জন আব্রাহামের নির্বাচিত সাক্ষাৎকার

953
জন আব্রাহাম

ভূমিকা ও অনুবাদ । এন. রাশেদ চৌধুরী

জন আব্রাহাম
জন আব্রাহাম
জন্ম ১১ আগস্ট ১৯৩৭–৩১ মে ১৯৮৭; ভারত

অনুবাদকের ভূমিকা

ভারতীয় সিনেমার নব ধারার অত্যন্ত সৃজনশীল, সচেতন ও প্রিয়বরেণ্য এক চলচ্চিত্র নির্মাতা জন আব্রাহাম, আজ থেকে ৩৩ বছর আগে [৩১ মে ১৯৮৭] কেরালার কোজিকোডে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তখন তার বয়স পঞ্চাশও হয়নি। তখনই তিনি তার শৈল্পিক সক্ষমতার এমন এক স্তরে পৌঁছে গিয়েছিলেন– যেন ততটাই হয়ে উঠেছিলেন দার্শনিক এক সৌম্যকান্তি– যতটা এক পাগলপারা দিকভ্রান্ত। যখন তিনি চিরতরে চলে গেলেন, তার সাথে সাথে যেন বিদায় নিলো– যাকে অংশতঃ বলা যায় তার সাথে জড়িয়ে থাকা ঋত্বিক বিশ্বেরও একাংশ! এই অনুভূতির অর্থ হয়তো ব্যাখ্যা করে বলা কঠিন! হয়তো এই সেই ব্যাখ্যাতীত উচ্চস্তরীয় সৃজনশীলতা– যা যোগ্য অনেকেও নাগালে পান না। আমেরিকান চলচ্চিত্র সমালোচক জন লেভিচ জন আব্রাহামকে ভারতীয় নতুন সিনেমার সবচেয়ে প্রতিভাবান প্রতিনিধি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ঋত্বিক ঘটকের ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে স্বল্পমেয়াদী কার্যকালে তার কিছুটা স্ফুলিঙ্গ তিনি নিজ ছাত্রদের মাঝেও সঞ্চারিত করতে পেরেছিলেন। ঘটকের তেলেগু অংশের অংশীদার না হলে একজন জন আব্রাহাম হয়ে উঠতেন না। জন তা-ই করেছিলেন, যেভাবে ঘটক তার প্রতিবাদের ভাষাকে সমর্থন যুগিয়েছিলেন। তার অন্যান্য শিষ্যদের ক্ষেত্রেও এটাই ঘটেছিল। কিন্তু এই অল্প ক’জন বাদে অন্যদের ক্ষেত্রে ঋত্বিকের এই স্ফুলিঙ্গ কার্যত কোনো প্রভাব ফেলেনি।

জন লেভিচ আরও বলেন, আমাদের উচিত আরও অনেকের মাঝে এই মহান শিল্পীর প্রভাব ছড়িয়ে দেওয়া। আমাদের তরুণ প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আরও বেশি করে প্রয়োজন এই বিকল্প ফিল্মমেকিং স্কুলের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

আব্রাহামের ব্যাপারে ঘটকের স্থির বিশ্বাস ছিল। তার মাঝে হয়তো তিনি তেমনি সৃজনশীল-সক্ষমতা দেখেছিলেন, যা তার অন্য অনেক ছাত্রের মাঝে ছিল না। ঘটক একবার এক সাক্ষাৎকারেও বলেছিলেন, তিনি জন আব্রহামের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছেন, এবং জনও তার ঋত্বিকদা’কে নিরাশ করেননি। মূলতঃ জনের শেষ ছবি, আম্মা আরিয়ান— যাকে অনেকেই ভাবেন মা এবং একইসাথে গুরুর প্রতি তার শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে।

জন আব্রাহাম
বিদ্যার্থীকালে ইথিলে ইথিলে
ফিল্মমেকার। জন আব্রাহাম

কেরালা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক শেষ করার পর জন আব্রাহাম লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির চাকুরিতে যোগ দেন এবং কোম্পানির বেঙ্গালুরু শাখার করনিক পদ অলঙ্কৃত করেন বেশ কিছুদিনের জন্য। অল্প কিছুদিন পরেই তিনি ভারতের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে যোগ দেন– যেখানে তার বন্ধুত্ব হয় কে. কে. মহাজন, মনি কাউলসহ আরও অনেকের সাথে। তার প্রথম ছবি বিদ্যার্থীকালে ইথিলে ইথিলে [This Way Student; ১৯৭১] শ্রেষ্ঠ কাহিনির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতলেও বৃহত্তর ক্ষেত্রে অপরিচিতই থেকে যায়।

অনেকেই আব্রাহামকে প্রথম জেনেছেন সত্তর দশকের শেষাব্দে নির্মিত তার দ্বিতীয় ছবি আগ্রাহারাথিল কাজুথাই-এর [Donkey in a Brahmin Village] হাত ধরে, যা অনেকের মাঝেই আগ্রহ ও আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। পরিচালকের নিজস্বভাষ– মালায়ালামে নয়, বরং তামিল ভাষায় নির্মিত এ ছবি এক অসহায় ছোট্ট গাধার গল্পের ভেতর দিয়ে ব্রাক্ষণ্য কুসংস্কারাচ্ছন্নতার সমালোচনায় চমৎকার এবং অস্বস্তি উদ্রেককারী একটি কাজ। গ্রামের যেকোনো দুরাবস্থার জন্য এই দুঃখী প্রাণীটিকেই সবাই দোষারোপ করে আসছিল– যা পরিণতি পায় একদল হন্তারক কর্তৃক ওকে গায়েব করতে নিয়ে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে। কিন্তু গালে জিহ্বা ঠেকিয়ে জন গল্পকে এখানে নিঃশেষ হতে দেন না। মরণোত্তর অলৌকিক ক্ষমতা ও প্রদত্ত শক্তির বলে অত্যন্ত সাধুগোছের এই চারপেয়ে পরিশেষে সকল রহস্য উদঘাটনের ডাক দিয়ে যায়।

তৃতীয় ছবি চেরিয়াচান্তে ক্ররা কৃথভাঙ্গাল [Cruelties of Cheriyachan; ১৯৭৯] শেষ করতে তাকে আরও পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হয়। ছবিটিতে তিনি ইতিহাসের প্রতিশোধ নিতে সচেষ্ট এক জমিদারের মাধ্যমে মধ্যযুগীয় জোতদারী ব্যবস্থাকে নিরীক্ষণ করেন।

তার চতুর্থ ও শেষ ছবি আম্মা আরিয়ান যথাযোগ্য কারণেই তাকে এক প্রবাদে পরিণত করেছিল।


জন আব্রাহাম
জন আব্রাহাম

সাক্ষাৎকার

[কে. এন. সাজি সম্পাদিত জন আব্রাহাম– অ্যান অ্যান্থলজি অব দ্য স্টাডিজ অন দ্য লাইফ অ্যান্ড ওয়ার্কস অব জন আব্রাহাম গ্রন্থে থাকা জনের সাক্ষাৎকারগুলোর সংকলিত অনুবাদ এটি]

সিনেমা কি কেবল পরিচালকেরই একটি সতন্ত্র সৃজনশীল কাজ নাকি এটি একটি দলবদ্ধ সৃষ্টিশীল কাজ?

জন আব্রাহাম
সিনেমা কোনো কালেকটিভ আর্ট নয়। জন আব্রাহামের একটা ছবি সম্পূর্ণভাবে ওর একারই, শুধু জন আব্রাহামেরই। আমি এক্ষেত্রে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি [অন্যেরা নন]। আমিই আমার ছবির হিটলার।

জন আব্রাহাম
জন আব্রাহাম, শুটিংয়ে

সিনেমাতে চিত্রগ্রাহক ও সম্পাদকের ভূমিকা কী?

জন আব্রাহাম
সিনেমাটোগ্রাফিই সিনেমা বানায়। কিন্তু [একজন পরিচালক হিসেবে] আমিই প্রথম ব্যক্তি যে ছবিটি চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনা করি। অন্যেরা সবাই আমার সাথে যুক্ত হন। টেকনিশিয়ান হিসাবে তাদের আমার শৈল্পিক অনুরণন বুঝতে এবং এর রসাস্বাদন করতে হবে। তা যাই হোক না কেন, তারা কেবল এতে যুক্তই হবেন না, আমার ছবির উত্তোরোত্তর উৎকর্ষ সাধনের জন্যও সচেষ্ট হবেন!

সিনেমাতে অভিনয় শিল্পীর কাজ কী?

জন আব্রাহাম
অভিনয় শিল্পীরা সিনেমার জন্য মূখ্য বিষয় নয়। আমি প্রেম নাজিরকে [মালায়ালম সিনেমার তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেতা] নিয়েও সিনেমা বানাতে পারি, আর এতে ১০টা গানও থাকতে পারে। তবু এটা শুধুমাত্র আমারই সিনেমা হবে [অভিনেতা বা অন্য কারও নয়]।

সঙ্গীত আর সিনেমা?

জন আব্রাহাম
দেখুন, ছবিতে সঙ্গীত বিষয়ে যে ভাবনার প্রয়োজন এবং পরিচালক যে তাতে ব্যর্থ হচ্ছেন, এসব পুরোপুরি ভুল ধারণা! কোনো কোনো সিনেমায় সঙ্গীতকে উপেক্ষাও করা যায়। তবে তা সম্পূর্ণভাবে পরিচালকেরই সিদ্ধান্ত।

চিত্রনাট্য কি সিনেমার জন্য অচ্ছেদ্য বিষয়? অনেকবারই দেখা গেছে, মালায়লাম সিনেমা যেন চিত্রনাট্যকারেরই ফসলে পরিণত হয়েছে [যেমন এম. টি. বাসুদেবান নায়ারের মতো করে]।


চিত্রনাট্য
তখনই মুখ্য
হয়ে উঠবে, যখন
পরিচালক পুরোপুরি ব্যর্থ হবেন

জন আব্রাহাম
যদি একজন পরিচালক বোকা-গাধা হন, তবেই কেবল সিনেমা চিত্রনাট্যকারের ফসল হয়ে উঠতে পারে। চিত্রনাট্য তখনই মুখ্য হয়ে উঠবে, যখন পরিচালক পুরোপুরি ব্যর্থ হবেন।

সিনেমা এবং যৌনতা কীভাবে পরস্পর-যুক্ত!

জন আব্রাহাম
আমার কোনো অশিষ্ট ছবি বানাবার পরিকল্পনা নাই। সিনেমাতে সেক্স বিক্রি করে টাকা বানানোর আগ্রহ আমার নেই। সেজন্যই আমি সেক্সি, সেক্স-সিনেমা বানাই না। স্মরণকালেরও অতীত সময় থেকে ভারতীয় ভাববাদে যৌনতা এক ঐশ্বরিক বিষয়। খাজুরাহো দেখ, গুরুভায়ুর মন্দির দেখ, ঐশ্বরিক বিষয় হিসেবে যৌনতা-বিষয়ক চিন্তাভাবনার প্রতিফলন এসবে খুব পরিস্কার। দ্রাবিড়িয়ান চিন্তা-ভাবনায়ও যৌনতা খুবই তীব্র বিষয়। মধ্যযুগে যখন ইউরোপীয় গোষ্ঠি যৌনতাকে ত্যাগ করল, আমরা সমগ্র হৃদয় দিয়ে তাকে গ্রহন করলাম।

জন আব্রাহাম

সাদা-কালো ও রঙিন সিনেমার মধ্যে কোনোটি কি অন্যটি থেকে উন্নত? এরকম বলা হয়, সাদা-কালোতে নাকি শার্পনেস বেশি পাওয়া যায়?

জন আব্রাহাম
সাদা-কালো বা রঙিন চলচ্চিত্রের মাঝে এমন কোনো বিষয় নেই। এমনকি শার্পনেস বিষয়ক ব্যাপারটাও সঠিক নয়।

সেন্সর বিধি কীভাবে সিনেমাকে নিয়ন্ত্রন করে? সেন্সর বোর্ডের প্রয়োজনীয়তা কী?

জন আব্রাহাম
এটি [সেন্সর বোর্ড] আমার চিন্তন প্রক্রিয়াকে, আমার উদ্ভাবনী ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এটি আমার হাত কেটে ফেলার মতো একটা বিষয়। আমি তো আর আমার দেশকে ধ্বংস করার জন্য সিনেমা বানাই না।

ভারতীয় সিনেমা কি একজন সত্যজিৎ রায়কে অতিক্রম করতে পেরেছে? ভারতীয় সিনেমার দু’টি ধারা-সত্যজিৎ রায় ও ঋত্বিক ঘটক [রায় স্কুল ও ঘটক স্কুল]। আপনি কী ভাবেন?

জন আব্রাহাম
সত্যজিৎ রায় একজন মহান পরিচালক। তিনি ভিক্টোরিয়ান রোমান্টিসিজমের ধারক এবং তার স্টাইল হলো নিও রিয়ালিস্ট। তবে ঘটক হলেন মারাত্মক ও সুতীব্র একজন ফিল্মমেকার। তর ছবির বিষয়বস্তু আপনাকে ঠিক আক্রমণ করে বসবে।

জন আব্রাহাম জি অরভিন্দন

আচ্ছা অন্যান্য দেশের তুলনায় কি সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর ছবি আলাদা?

জন আব্রাহাম
তারা আমাদের চেয়ে যেকোনোভাবেই উন্নতমানের। আমি ক্রিস্তফ জানুসসির ছবি দেখেছি। তারা তাদের সরকারের কঠোর সমালোচক। এবং সরকারও তাদের কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেয়। আমাদের এখানে এখনো সেরকমভাবে ছবি করার সুযোগ হয়নি।

একজন ফিল্ম ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষিত চলচ্চিত্র নির্মাতা একটি দাম্ভিকতা বিবর্জিত সাধারণ ছবি বানাচ্ছেন [আগ্রাহারাথিল কাজুথাই বা ডঙ্কি ইন অ্যা ব্রাহ্মিন ভিলেজ], এটি কি একটি অত্যাশ্চর্য বিষয় নয়?

জন আব্রাহাম
আমাদের কেউই এফটিআই’তে সিনেমা বানানো শিখিনি। সিনেমা পরিচালনার আর্টও কাউকে শেখানো হয়নি সেখানে। ঠিক যেভাবে ছোট্ট শিশুরা এ, বি, সি, ডি, ই… শেখে, আমরা সিনেমা সম্পর্কে শিখেছি সেভাবেই। কেবল এ, বি, সি, ডি… লেখা শিখলেই কেউ জ্যঁ পল সার্ত্রে বা লুই বোর্হেসের মতো লিখতে পারেন না।


যদি
কেউ ভালো
সিনেমা আস্বাদনের
স্বাদ তৈরি করতে পারেন,
তবে তিনি পুরোনো স্টাইলের
মাঝে আর সত্যতা খুঁজে পাবেন না

আমাদেরও সিনেমা সম্পর্কে কোনো আইডিয়াই ছিল না! ইনস্টিটিউটে আমরা পৃথিবীর বিখ্যাত ক্লাসিক সিনেমাগুলো দেখেছি। তবে আমরা একটা নতুন আর্ট-মাধ্যম সম্পর্কে জানতে খুব উচ্ছ্বসিত ছিলাম। যদি কেউ ভালো সিনেমা আস্বাদনের স্বাদ তৈরি করতে পারেন, তবে তিনি পুরোনো স্টাইলের মাঝে আর সত্যতা খুঁজে পাবেন না।

যে কেউএকটা সিনেমাকে তার নিজের স্টাইলে দেখতে পারেন এবং তার এই অধিকার আছে– তিনি এটাকে একেবারেই নিজের মতো করে বিশ্লেষণ করতে পারেন। আমি কেবল নিজের ধারণাই ফিল্মে বর্ননা করতে পারি। আমি ফিল্মকে ব্রেখটীয় ধারণা থেকে বর্ননা করতে পারি না।

আমরা ইন্ডিয়ানরা আবেগপ্রবণতাকে বিশেষ গুরুত্ব দিই। সিনেমায় আমার অভিগমনও বুদ্ধিবৃত্তিতার বিপরীতে বরং বেশী আবেগপ্রবণতায়। যখন ছবি বানাই, আমি চাই বেশি মানুষ তা দেখুক। যদি তারা এটা না দেখে, আমি ভাবি, ফিল্মমেকার হিসেবে হয়তো ব্যর্থ হয়েছি।

‘ব্যক্তিগত সিনেমা’কে আপনি কীভাবে দেখেন?


ব্যক্তিগত সিনেমাকে আমি
এক রকম হস্তমৈথুন
প্রক্রিয়ার মতো
দেখি

জন আব্রাহাম
ব্যক্তিগত সিনেমাকে আমি এক রকম হস্তমৈথুন প্রক্রিয়ার মতো দেখি। আমি সিনেমা বানাতে ইচ্ছুক, যা সাধারণ মানুষ উপভোগ করতে পারে। আমি আমার মানুষদের ভালোবাসি। যাদের ভালোবাসি, আমরা কেউ তাদের উপেক্ষা করতে পারি না। আমার লোকেরা [দর্শক] আমার ছবি দেখবে ও বুঝতে পারবে– এ বিষয়ে আমি সুনিশ্চিত। আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন, আমার ছবি ডঙ্কি ইন অ্যা ব্রাহ্মিন ভিলেজ দিয়ে কতটুকু ও কী কমিউনিকেট করতে চেয়েছি। এর উত্তর খুব একটা সহজ নয়! আমার ছবি দিয়ে আমাকে পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ করতে পারাই আমার আকাঙ্ক্ষা।

জন আব্রাহাম
ডঙ্কি ইন অ্যা ব্রাহ্মিন ভিলেজ
ফিল্মমেকার । জন আব্রাহাম

শক্তির দ্রাবিড়িও ধারণাই আমার কাছে পূজনীয়। খেয়াল করে দেখবেন, খ্রিষ্টান মিথেরও অনেক উপাদান আমার সিনেমায় ব্যবহৃত হয়। এই গাধা এবং যিশুখ্রিস্টের মাঝে অনেক মিল রয়েছে। যিশুখ্রিস্টকে হত্যা করা নিয়েও তখনকার মানুষদের মাঝে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অলৌকিক ঘটনার অবতারণা আছে। তারা যিশুর নামে গির্জা তৈরি করেছে। আমার ছবিটির শেষেও দেখা যাবে, সকল চরিত্রই সেখানে এসে পৌঁছে, যেখানে গাধাটিকে হত্যা করা হয়। কোরিওগ্রাফিক মুভমেন্টের মাধ্যমে এদের প্রত্যেকের মুখমণ্ডল দেখানো হয়। আমি এখানে সেই মিথের অলৌকিকত্বকেই প্রদর্শন করতে চেয়েছি। এভাবে আমি ছবিটির নানা স্তরকেই বর্ননা করতে পারি।

আপনি এখানে সাধারণের সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের কথা বললেন। আপনার এই ছবি বা চেরিয়ান কি তা অর্জন করতে পেরেছে?

জন আব্রাহাম
আসলে আমি তা অর্জন করতে পেরেছি কি না, আমার কোনো ধারণাই নেই! আমি সর্বতোভাবে সেটা করতে চেষ্টা করেছি। আমি কোনোকিছুই কখনো ঢেকে রাখতে চাইনি। আপনাকে মনে রাখতে হবে, এই প্রজন্ম ওপিয়ামের [একটি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র] প্রভাবে প্রভাবিত দর্শককূল। আমিই প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতা নই। সিনেমার জন্মলগ্ন থেকেই এই দর্শককূল দূষণের শিকার হয়ে আসছে। সিনেমার ইতিহাসের ৭০টি বছর আমাদেরকে এই দূষণের কথা বলে। আমাদের এটাকেই ভেদ করে বেরিয়ে আসতে হবে।

হলিউডি সিনেমার বিষ্টা এই মালায়লাম সিনেমায় এমনকি পি. ভাস্করণেও আছে। আমি এভিল ডিড অব চেরিয়ান আমার সকল সদিচ্ছা নিয়েই বানিয়েছি। কিন্তু এটি সেই আরাধ্য সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ডঙ্কি ব্যর্থ হয়নি। যদিও এটা আমি যথেষ্ট সচেতনতা নিয়ে করিনি। চেরিয়ান বানাতে গিয়ে যে স্টাইল গ্রহণ করেছি, সেটা সাধারণের কাছে পৌঁছুতে ব্যর্থ হয়েছে, এটার থিম নয়। ডঙ্কির একটা সাহিত্য স্বাদ ছিল; এটি একটা গল্প বলে। চেরিয়ান তেমন নয়। আমার মনে হয় এই ছবিটা আমি বানিয়েছিলাম বিশেষ এক দর্শককূলের উদ্দেশ্যে।

এভিল ডিড অব চেরিয়ান
ফিল্মমেকার । জন আব্রাহাম

চেরিয়ান এক মধ্যবিত্ত কৃষকের গল্পকে চিত্রিত করে। তার ভূমি ও শ্রমিক বিষয়ক ধারণাও ছিল পরিবর্তনশীল ও চতুর। আমার মনে হয়, আমি ছবিতে এই আঙ্গিককে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করিনি। একজন সিজোফ্রেনিক সামন্ততন্ত্রীর পুলিশ সম্পর্কে বিতৃঞ্চা তৈরি হওয়া নিয়ে ছবি এটি। এই দৃশ্যায়নের উপহাস চূড়ান্ত ফুটে উঠেছে– যখন সে উঁচু নাড়িকেল গাছের মাথায় বেয়ে উঠে পড়ে। এত্তসবের পরও আমি পৃথিবীর সত্যিকারের সাধারণ দর্শকগোষ্ঠিকে ছুঁতে পারিনি।

আমার আসলে ছবিটি বানাবার সময় আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত ছিল।

সিনেমা এমন হওয়া চলবে না। আমি দর্শককে প্রশ্ন করতে চাই! আপনারা কি এই চাপ সহ্য করে যেতে চান? আপনাদের কি স্বাধীনতা প্রয়োজন নেই! আপনারা কি স্বাধীন হতে চান না? আপনাদের কি খাদ্যেরও প্রয়োজন নেই? আপনারা কি কেবলই ভাগ্যের কাছেই সব সঁপে দিতে চান!

আসলে আমি মূলতঃ একজন মানবতাবাদী। আমার সমাজ সম্পর্কে নিজস্ব ভাবনা চিন্তা রয়েছে। আমি আমার সমাজের মুক্তি বিষয়ে গভীরভাবে আগ্রহী। আমি তাদের দ্রুত পচন চাই না। তাই সিনেমা অবশ্যই শিক্ষণীয় হওয়া উচিত। সেজন্যই আমি বাণিজ্যিক ছবি বানাই না, এবং চেষ্টা করি শিক্ষণীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সিনেমা বানাতে, যাতে আমার দর্শক আত্ম-সচেতনতা লাভ করে।

এই শিক্ষণীয় ব্যাপারটি কি কেবল অনুভূতিপ্রবণতা? নাকি অন্যকিছু?

জন আব্রাহাম
এটি আসলে সবকিছুকে ঘিরেই ঘটে থাকে। এটি মানুষকে আরও বেশি মানবিক করে তোলা। একজন গুরু বা শিক্ষকের প্রচেষ্টা হলো একজনকে তার চিন্তন-প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া। আর তাই এখানে সংবেদনশীলতা মানে হলো সেই ব্যক্তিকে ততটাই শক্তিশালী করে তোলা, যাতে সে আমাকেও প্রশ্ন করতে পারে।

মৃত-চৈতন্যকে জাগানোর আর কোনো পথ নেই। বিগত ৭০ বছর ধরে, বাণিজ্যিক ধারার সিনেমার দৃশ্যপট– সিনেমার তারকাদের এমন এক অতিমানবীয় [লার্জার দ্যান লাইফ] চরিত্রায়ন করেছে যে, সাধারণ মানুষ এসব দৃশ্যপটের প্রতি নতজানু হয়ে পড়েছে। ঠিক এজন্যই আমাদের প্রয়োজন তৃতীয় নয়ন। তৃতীয় নয়নে দেখতে পাওয়া এক জ্বালাময়ী অভিজ্ঞতা। আমাদের চোখ ও কান অনেক পুরনো। আর আমি এমনই এক অনুভূতিহীন সমাজকে সম্ভাষণ জানাচ্ছি।

তো, চেরিয়ানডঙ্কি বানাবার ক্ষেত্রে জানতেন, এমনই এক দর্শককূলকে আপনি সম্ভাষণ করছেন!

জন আব্রাহাম
হ্যাঁ, সেজন্যই আমি খুব সাধারণ স্টাইলে ডঙ্কি বানিয়েছিলাম। এর এক রসাত্মক ভঙ্গিমা ছিল। যেটা আমি চেরিয়ান-এ করতে পারিনি। শুধু এইজন্যে নয় যে, চেরিয়ানের চরিত্রে আমি এমন এক অভিনেতাকে নির্বাচন করেছিলাম, যিনি তার রসিক চরিত্রের জন্য পরিচিত ছিলেন। এই আদূর বাসি’র নাম শুনলেই দর্শকদের হাসি পেত। এক প্রকার বিচ্ছিন্নতা তৈরি করতে ইচ্ছাকৃতভাবেই এই চরিত্র নির্বাচন করা হয়েছিল। দর্শকরা হাসির সিনেমা দেখতে এসে হতাশা নিয়ে ফিরে যেত। আর আমিও ছবিটিতে কখনোই কোনো রসাত্মক দৃশ্যের অবতারণা করিনি, যদিও এর বিশাল চাহিদা ছিল।

তবে কি আপনি বলছেন, অভিনেতাদের ক্ষেত্রে স্টাইলাইজেশনের প্রয়োজন রয়েছে?

জন আব্রাহাম
সৃষ্টিশীল কাজ তো আর সত্যিকারের কিছু নয়। আর তাই আর্ট ওয়ার্কের ক্ষেত্রে শৈলী নির্ভরতাও এর এক অনুষঙ্গ। যদি সত্যপ্রকাশ আপনার জন্য অনিবার্য হয়ে ওঠে, তবে আপনি ডকুমেন্টারি করতে পারেন। আর এজন্য আপনার প্রয়োজন হবে শুধুই একটা ক্যামেরা। আর আমাকে সেই ক্যামেরার পেছনেও দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই। আমি যখন ক্যামেরার পেছনে দাঁড়াই, তাহলে আমি আমার সম্মুখে ঘটমান বাস্তবতারও অংশ হয়ে উঠি। যখন আমি তাতে অংশ নেই, তখনই স্টাইলাইজেশন ঘটে। এ কারণেই এটি আমারই দৃষ্টিকোণে পরিণত হয়।

আপনি কি তবে বলবেন, প্রতিটি ছবিরই শৈলীনির্ভরতার [স্টাইলাইজেশন] প্রয়োজন রয়েছে? এটি তো আখ্যানেরও অংশ হতে পারে।


আমাদের
খুব সাধারণ
একটা দৃশ্যায়ণ ভাবনাও
যেন হারিয়ে
গেছে

জন আব্রাহাম
তুমি এটাকে এক প্রকার আক্ষরিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চাইছ। চিত্রগ্রহণই কেবল সিনেমার বিষয়; এর কোনো আখ্যান নেই। এর কোনো সীমাবদ্ধতাও নেই। এটি একটি মুক্ত মাধ্যম। আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয় হলো এর পুঁথিগত প্রশিক্ষণ। আর বিষয়টা এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, আমরা সিনেমাকে এর সাহিত্যিক পরিকাঠামোর বাইরে দেখতেই পারি না। আমাদের খুব সাধারণ একটা দৃশ্যায়ণ ভাবনাও যেন হারিয়ে গেছে। ইউরোপে টেলিভিশন এই দৃশ্য-পাঠ দেওয়া শুরু করেছে। আর আমরা এখনো শব্দ দিয়েই গল্প বলে চলেছি– তা সেটা দাদীমার বলা গল্পই হোক, মহাভারত-রামায়নের গল্পই হোক। আমাদের জন্য শব্দই সর্বাগ্রে। এবং শব্দ অনেক দ্যোতনাময়ও বটে।

মনি কাউলের উসকি রোটিতে আপনি শেষ পর্যন্ত কী করলেন?

জন আব্রাহাম
এফটিআই থেকে পাস করে বেরিয়েই আমার সুযোগ হয়েছিল মনি কাউলের উসকি রোটিতে কাজ করার। ছবির কাহিনি আমার খুবই পছন্দ হয়েছিল। এটা হিন্দি নাট্যকার মোহন রাকেশের; ওই একই শিরোনামের একটা নাটক ছিল। আমি দিল্লি গিয়ে মনির সাথে যোগ দেই ছবির চিত্রনাট্যের কাজ করতে। আমি আরেকটা অফারও পাই, ফিল্মস ডিভিশন থেকে– হিমালয়ের ওপর একটা ডকুমেন্টারি বানাবার জন্যে। ওই কাজের নির্ধারিত পরিচালকের এক রোড অ্যাকসিডেন্ট হওয়ায় তারা আমাকে কাজটা দিয়েছিলেন। এটাই আমার প্রথম কোনো কাজে নিয়োগ ছিল; এর মানে এই না, এটা আমার প্রথম সিনেমা।

এই কাজের শুটিং শেষ করে আমি যখন হিমালয় থেকে দিল্লি ফিরে আসি, তখনি চলচ্চিত্র অর্থায়ন সংস্থা উসকি রোটির জন্য ঋণ অনুমোদন করেছিল। মোহন রাকেশের বাড়িতে থেকে আমি আর মনি তখন ছবির বিস্তারিত স্ক্রিপ্ট তৈরি করি। আমিই প্রথম লোকেশন দেখতে গিয়েছিলাম। প্রিভিউ স্ক্রিনিংয়ের সময় আমি ছবিটা পছন্দ করিনি। ছবিটার ফর্মটা আমার পছন্দ হয়নি।

উসকি রোটি একটা আবেগপ্রবণ কাহিনি ছিল। আপনি যখন আবেগটাকেই শুকিয়ে ফেলবেন, আর ছবিটাতে যেমন আছে– ওরকম একটা কাঠামো দেবেন, এটা ভণ্ডামি। গল্পের বিষয়বস্তুতে যদি আবেগ থেকে থাকে, তাহলে স্ক্রিনেও সেটা থাকতে হবে। আমি একবার মৃণাল সেনকেও একই কথা বলেছিলাম–ওর আকাশ কুসুম দেখে। ছবিটা ছিল এক মিউজিশিয়ানের গল্প নিয়ে, কিন্ত এমনকি একটাও গান ছিল না তাতে। এটা ঠিক না। ঠিক কোনো কারণ ছাড়াই ছবিতে গান ব্যাবহার করা যেমন, প্রয়োজন থাকলেও সেটা না ব্যবহার করাও তেমনি বাজে একটা ব্যাপার। যেটা ব্যবহার করা প্রয়োজন, সেটাকেও যদি না করেন– এটা হয় অজ্ঞতা, নয়তো তার বুদ্ধিবৃত্তিক-ভণ্ডামি।

চেরিয়াচান আপনারই পূর্বপূরুষের সামাজিক পারিপার্শ্বিক বিষয়ের ছবি। এটা কীভাবে ঘটল?

জন আব্রাহাম
আমি ১৯৮০ সালে চেরিয়াচান্তে ক্রুরা কৃথাংগাল [Evil Deeds of Cheriyan] শুরু করেছিলাম। এটা এমনই এক গল্প, যেটা আমি ব্যক্তিগতভাবেই জানতাম। এটা আমার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি বিষয়, একটা রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা। এর চিত্রনাট্য লেখার সময়ও আমি নানারকম বিভ্রান্তির মধ্যে দিয়ে অতিক্রান্ত হয়েছি। কুত্তানাদে [তার পিতৃপূরুষের গ্রামে] এক কৃষকের জীবন সংগ্রাম এবং ওই পটভূমিতেই আরও ৬ জন কৃষকের মৃত্যু ও ওইস্থান থেকে পলায়ন ঘটেছিল। কিন্তু এর মধ্যিখানে আরও একজন ছিল, একজন কংগ্রেস কর্মী, এক পেটি বুর্জোয়া। প্রকৃত জীবনে তিনি আমার আত্মীয়ও ছিলেন। তিনি ওখান থেকে পালিয়ে গিয়ে কোনো শিক্ষালয়ে যোগ দিয়েছিলেন। ওই ঘটনাকে ঘিরে আত্মপীড়ন ও চেরিয়াচানের মানসিক অস্থিরতা দিয়েই ছবিটি শুরু হয়।

এ ঘটনার রাজনৈতিক বিষয়বস্তুতে প্রবেশের কোনো আকাঙ্ক্ষা আমার ছিল না; তবে আমি মনোযোগী হতে চেয়েছিলাম ওই ঘটনাকে ঘিরে চেরিয়াচানের মাঝে আবর্তিত নিদারুণ যন্ত্রনাকাতর বিষয়াবলীতে। এটাই সিনেমাটার কাহিনি।

আম্মা আরিয়ান
ফিল্মমেকার । জন আব্রাহাম

আম্মা আরিয়ান-এর [Report to Mother] নির্মাণ নিয়ে কিছু বলবেন?

জন আব্রাহাম
এই ছবিটি কোনো প্রচলিত ধারায় অথবা কোনো জনপ্রিয় স্টাইলে তৈরি নয়। আর তাই এর চরিত্ররাও কল্পনাশ্রয়ী নয়– বরং ঘটনা পরম্পরা বা পরিস্থিতির শিকার। একভাবে বলা যায়, পরিস্থিতির কারণেই তারা হাজির হন। আর ছবিটার মূল ধারণাও এসেছে এক প্যারাগ্রাফের একটা রিপোর্ট থেকে। এই রিপোর্ট কোনো চরিত্রকে ঘিরে, কখনো কোনো ঘটনাকেন্দ্রিক, এবং আবার এটা পরিচালকের নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকেও হতে পারে।

এর মানে এই নয় যে, এটা একটা অনন্য স্টাইল। নৈর্ব্যক্তিকতা শুধু কয়েকবারই এখানে চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। এছাড়া এটা চিত্রায়িত ঘটনা-নির্ভরই বটে। ছবির একটি বিষয়ের সংশোধনকে কেন্দ্র করে আমি আমার বিষয়ভিত্তিক দৃষ্টিকোণ সামনে নিয়ে আসি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ডায়ালগ ট্র্যাকের বাইরে আমি আমার নিজস্ব ধারাবর্ণনা ব্যবহার করি এবং কোনো একটা বিষয়কে বর্ণনা করতে চরিত্রদের মনোলোগকেও ব্যবহার করি।

আমি মিউজিক সিম্ফনির ধারণা থেকে রিয়েলিজমকে ব্যবহার করেছি। সেটা হলো মিউজিক ও এর পাল্টা ধারণা। এতে রয়েছে সংগীতের দু-দুটো পরস্পরবিরোধী আলোকরশ্মি, যা একে অন্যের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আর এটাই ছিল ছবিটিতে প্রদর্শিত বাস্তবতা বিনির্মাণের সেই ভিন্নতর অ্যাপ্রোচের ভিত্তি।

Print Friendly, PDF & Email

5 মন্তব্যগুলো

  1. রাশেদ ভাই লেখাটা পড়লাম। এরকম লেখা, সাক্ষাৎকার আরো বেশি করে হওয়া প্রয়োজন। আমরা যারা নতুন কাজ করছি তাদের কাছে সিনেমা দেখাই শুধু নয় সিনেমা পাঠের এই চর্চাও গুরুত্বপূর্ন। আশা করি আরো গুরুত্বপূর্ন শিল্পীর কাজ নিয়ে আপনার আলোচনা, অনুবাদ পাবো।

  2. দারুন…জন সম্পর্কে জানার কিছুটা সুযোগ করে দেওয়ারজ…

  3. জন আব্রাহামের মৃত্যু সড়ক দূর্ঘটনায় হয়েছে দাবি
    করা হয়েছে,যা উইকি সোর্সে দেয়া মৃত্যুর কারণের
    সাথে মিলছেনা,লেখক এটি কোথায় পেয়েছেন যদি
    পরিষ্কার করেন?

  4. দুঃখিত! ‘সড়ক’ শব্দটি একটি প্রমাদ-যা অসাবধানতাবশতঃ যুক্ত হয়েছিল! এখন ঠিক করে দেয়া হয়েছে… ধন্যবাদ আপনাকে!

মন্তব্য লিখুন

Please enter your comment!
Please enter your name here