লিখেছেন । টোকন ঠাকুর
সিনেমা নানাপ্রকারের। প্রত্যেক সিনেমাই তার মতো করে হয়ে ওঠে, কারণ, প্রত্যেক সিনেমার নির্মাতা যেমন, সেই সিনেমার ভঙ্গিটা সেইরকম। ১৯৭০ সালে জহির রাহয়ানের জীবন থেকে নেয়া যেভাবে যা হয়ে উঠেছিল, সেটি তার মতো; ১৯৮৯ সালে তোজাম্মেল হক বকুলের বেদের মেয়ে জোসনা হয়ে উঠল হয়তো অঞ্জু ঘোষের মতো। ঋত্বিক ঘটক বললেন, “হুম, নায়ক-নায়িকা তো আছেই আমার ছবিতে, তিতাস নদীটা আমার নায়ক, তিতাসের পাড়ের মালোপাড়া গ্রামটাই আমার ছবির নায়িকা।” [গোকর্ণঘাট গ্রামে আমি গিয়েছি একবার, অদ্বৈত’র বাড়ির অস্তিত্বের সন্ধানে] ব্রাক্ষণবাড়িয়ার গোকর্ণঘাটের পাশে অদ্বৈত মল্ল বর্মণের গ্রাম। তিতাস নদীর পাড়ের গ্রাম। তাই প্রত্যেকটি সিনেমাই হয়ে ওঠে আগের কোনো সিনেমার রিফ্লেকশনে নয়, হয়ে ওঠা সিনেমাটি হয়ে ওঠে তার নিজের চরিত্র অনুসারে। আগের সব অভিজ্ঞতার চেয়ে সেখানে নতুন একটি অভিজ্ঞতার বাতাবরণ তৈরি হয়।

কাঁটা দ্য ফিল্মও তৈরি হচ্ছে তার নিজের চরিত্রে, কারোর আগের কোনো কাজের অভিজ্ঞতা সরাসরি এখানে কাজে লাগবে না। শহীদুল জহিরের মনোজগতের কাঁটা নির্মাণে নেমে আমরা টের পাই, এই নির্মাণ নির্মাতা টিমের জন্যেও নতুন। প্রতিটি দিনই নতুন একটি দিন যেমন, প্রতিটি শব্দই একটি নতুন কবিতার উৎস যেমন, প্রতিটি যুদ্ধই যেমন নতুন একটি যুদ্ধ, প্রতিটি সিনেমাও নতুন একটি সিনেমা। ঋত্বিক ঘটককে তো আমাদের বন্ধুই বলা যায়, মনে করা যায়, করিও, তাই বন্ধুর দিকে তাকিয়ে আমিও বলতে পারি, কাঁটা দ্য ফিল্ম-এও নায়ক-নায়িকা আছে, সময় ও ঘটনা পরস্পর নায়ক বা নায়িকা হিসেবে প্রতিভাত হবে পর্দায়।
…মাটির পুতুলের
ঠোঁটে
ভাষা
দেবেন নির্মাতা…
প্রত্যেক অভিনেতা-অভিনেত্রীর জন্যেও প্রতিটি চরিত্রই নতুন একটি চরিত্র, যা সে নিজে মোটেও নয় কিন্তু তাই সে করে দেখাবে। কতখানি দেখাতে পারল বা নির্মাতা তার কতখানি গ্রহণযোগ্য মনে করলেন, তার ব্যাপার। নির্মাতা আপনার জন্যে নির্মিত চরিত্রটিও আপনাকে নতুন ভাবে নির্মাণ করবেন, নির্মাণ করবেন আপনাকে। আপনি নির্মিত হবেন। নির্মিত হবে ছবিটি। নির্মাণাধীন ছবিতে আপনি স্রেফ পুতুল, আপনাকে হাঁটা-চলা-কথা বলা শিখিয়ে দেবে আপনার ছবির নির্মাতা বা বাংলা কথায় যিনি পরিচালক। মাটির পুতুলের ঠোঁটে ভাষা দেবেন নির্মাতা।

কত যে মানুষ, কত যে চরিত্র! প্রতিটি চরিত্রই তার মতো, সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উদ্ভাসিত। সব চরিত্রই কি উদ্ভাসিত? কেউ কেউ কি অবগুণ্ঠিত নয়? সব চরিত্রই কি সকাল-দুপুর? কোনো চরিত্র কি নয় সন্ধ্যার পূর্বরাগ, কোনো চরিত্র কি নয় আবছায়া নৈশবারান্দা? কোনো চরিত্র কি নয় নির্ঘুম, বিছানায় এপাশ-ওপাশ? কোনো-কোনো চরিত্র এমন, মাত্র কয়েকটি মুহূর্ত বা কিছু দৃশ্যেই সে প্রস্ফুটিত! কোনো চরিত্র কি ধুমকেতু ধরনের, টিমটিমে নয়, ঝলকিত উপস্থিতি কিন্তু তীব্র, উজ্জ্বল ও ব্যাপক প্রভাবক যেমন, কেউ কেউ থাকে নিভু নিভু, তাকালেই দেখা যায়– থাকেই তো চারপাশে ঝাঁক-ঝাঁক চরিত্র ভূতের গলিতেও চরিত্র হয়তো আড়াইশোর অধিক মোটামুটি। অনেক কাটাকুটি করে দাঁড়িয়েছে তারা কাঁটা দ্য ফিল্ম-এর চিত্রনাট্যে। সেই চরিত্র বিন্যাস হয়েছে অডিশন থেকে আগতদের মধ্যে।
আড়াইশো চরিত্রের সন্ধানে আমি বাজারের বা দোকানের জিনিস কম নিতে চেয়েছি। তাই টেলিভিশন, মঞ্চ বা প্রথাগত সিনেমার লোক আমি চাইনি, চাইও না। কারণ, অভিনয়-অভিজ্ঞতার চেয়ে দরকার কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মানুষ। তাইলেই আমি পারব, করিয়ে নিতে। সে বিশ্বাস আমার মধ্যে সবসময় বিদ্যমান। আর ফিকশনে তারকা-ফারকা জিনিসটায় আমার সামান্য কোনো আস্থা কোনোকালেও নেই, এখনো নেই।

বেশির ভাগ সন্তান তার ধাত্রীকে মনে রাখতে পারে না। খুব অল্প কটি সন্তানই শুধু মনে মনে টের পেয়ে পূর্ণপ্রাণ নিমজ্জনে থাকে তার মাতৃত্বের প্রতি, মায়ের প্রতি। চিত্রনাট্যের সকল চরিত্র কি মনে রাখতে পারবে তার ধাত্রীদের, অক্লান্ত প্রোডাকশন সহযোদ্ধাদের? এইসব কথা একবার মনে আসে। আবার এও মনে আসে, আচ্ছা, ওরা মানে চিত্রনাট্যের চরিত্রেরা কি জানে, এর প্রণেতা কত নির্ঘুম থেকে থেকে কত মনোযোগ দিয়েই ওদের গড়েছে! ওরা কি জানে, ওরা প্রণেতার পা থেকে মাথা পর্যন্ত মোড়ানো প্রতিটা চরিত্র! তাদের হাঁটাচলা, শ্বাস-নিঃশ্বাস ফেলে বেঁচে থাকা, জামা-কাপড় পরা বা চরিত্রদের শরীর ছাড়িয়ে মনোগজতের দিকে ধাওয়া দিয়ে যাওয়া এর প্রণেতা বা নির্মাতার জীবন যে মিশে মিশে আছে, তাই চরিত্রদের যখন-তখন সামনে দেখতে ইচ্ছে করে।
…কোনো প্রসূতিই
ভালো করে ঘুমোতে
পারে না। নির্মাতাও
তাই …
চরিত্রেরা ভর করে আছে নির্মাতার মাথার মধ্যে। শত-প্রশ্ন করে যদি তাদের বের করে নিত, যে যারটা, নির্মাতার মাথা হালকা হতো। তার ভালো ঘুম হতো। কোনো প্রসূতিই ভালো করে ঘুমোতে পারে না। নির্মাতাও তাই। এটি অনুধাবন করতে পারা ও করতে পেরে সেই অনুযায়ী নির্মাতার শরীর-মনের ভেতরে ঢুকে হাতুড়ি-বাটাল মেরে হলেও নিজের চরিত্রটি বের করে নেওয়ার অভিপ্রায়ে যদি বসে থাকে অ্যাক্টরেরা; যদি এর প্রণেতা ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হওয়ারও আগে দেখতে পেতেন, ক্যারেক্টর কনসিভ করে দেন ডেলিভারি দিতেই অপেক্ষা করছে তারা, খুব ভালো হতো, খুব ভালো হয়।

যেভাবে মা তার সন্তানকে ভালোবাসে, নির্মাতাও তার সন্তানকে ভালোবাসে। একটি ছবিতে অনেক মানুষ যুক্ত হয়ে কাজ করেন। সেই অনেক মানুষ, তারা এবং তাদের নিয়ে সম্পন্ন করে ওঠা কাজটাই নির্মাতার সন্তান। এ একটা অনুভূতি। অনুভূতি শুধু অনুভুতি দিয়েই ধরতে হয় বা ধরা যায়। সিনেমাকে ভালোবেসে যুক্ত হোন, সিনেমাও আপনাকে ভালোবেসে জড়িয়ে নেবে। জড়িয়ে নেবে দর্শক। এখন, কষ্ট তো করে যেতেই হবে। সিনেমা দেখতে যতই আরাম-আয়েসি কিছু হোক না কেন, বানাইতে অনেক কষ্ট, সেই কষ্ট ভাগ করে নিয়ে আনন্দের সঙ্গে কাজ করে যাওয়াই সিনেমা-ধর্ম। এই ধর্মে যারা ধার্মিক হচ্ছেন, তাদের নিয়েই আমাদের কাজ।
তাই বলছি কি, পারলে ঋত্বিক ঘটক দ্যাখো, পুনরায় দ্যাখো। ছেচল্লিশ সাল দ্যাখো। দাঙ্গা দ্যাখো। দেখামাত্রই হিন্দু মুসলিমকে এবং মুসলিম হিন্দুকে কেটে ফেলছে, ইতিহাসের রক্ত লাগা পৃষ্ঠায় চোখ বুলিয়ে হাঁটো। সাতচল্লিশ সাল দ্যাখো, দেশভাগ দ্যাখো। তাই ঋত্বিক ঘটক দ্যাখো। ”কোমলগান্ধার’ দ্যাখো। । ভৃগু আর অনুসূয়াকে দ্যাখো। সুবর্ণরেখা দ্যাখো। সীতা আর অভিরামের মা’কে দ্যাখো। নবরতন কলোনির জীবনযাপন দ্যাখো। আবারও মেঘে ঢাকা তারা দ্যাখো। যুক্তি তক্কো আর গপ্পো দ্যাখো। বারবার দ্যাখো। ইচ্ছে হলে পঞ্চাশের দশক দ্যাখো। কাশ্মিরের হজরত বাল মসজিদের ঘটনাটি দ্যাখো। ১৯৬৪ সাল দ্যাখো। আবারও ঢাকা-কোলকাতার দাঙ্গা দ্যাখো। উন্মাদ হিন্দু-মুসলমানের হিংস্রতা দ্যাখো। ১৯৭১ সাল দ্যাখো। পাকিস্তানি প্রশাসনের শোষণ দ্যাখো। ৭ মার্চ দ্যাখো। বঙ্গবন্ধুকে দ্যাখো। ২৫ মার্চের ভয়াল রাত দ্যাখো। নির্বিচারে অগণন বাঙালিকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করে ফেলা দ্যাখো। নদীপাড়ের বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ দ্যাখো। তারপর স্বাধীন দেশেও সামরিক শাসন দ্যাখো। ১৯৮৯-৯০ সাল দ্যাখো। বাবরি মসজিদ দাঙ্গা দ্যাখো। পারলে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া, দেশ ছেড়ে যাওয়া শরণার্থীদের দ্যাখো।
…পারলে বাংলাদেশের
হিন্দু-বৌদ্ধ,
আদিবাসি-সাঁওতাল উৎপীড়ন
দ্যাখো। উৎপীড়িত মায়ানমারের
রোহিঙ্গা মুসলিমদের দ্যাখো। এবং
সিনেমা দ্যাখো…
পারলে বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ, আদিবাসি-সাঁওতাল উৎপীড়ন দ্যাখো। উৎপীড়িত মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের দ্যাখো। এবং সিনেমা দ্যাখো। কিম কি ডুক দ্যাখো। কিয়ারোস্তামি দ্যাখো। ক্রিস্টোফার নোলান বা গঞ্জালেস ইনারিতু দ্যাখো। পারলে বই পড়ো। ভালো গল্প, ভালো কবিতা পড়ো। ভালো ছবি দ্যাখো। ফেলিনি দ্যাখো। তারকোভস্কি দ্যাখো। প্লিজ, টিভি দেখো না। গাছপালা-মানুষের জীবনযাপন দ্যাখো। গান শোনো। সমুদ্রের শব্দ শোনো। যদি সত্যিই উৎকর্ণ হও, পাহাড়ের ডাক শুনতে পাবে, শোনো। নৈঃশব্দ্যের মধ্যে গুম হয়ে যাওয়া শেখো, জানালার শিক ভেদ করে তাকিয়ে থাকা শেখো, কিন্তু টিভি দেখো না।

পারলে অমিয়ভূষণ বা কমলকুমার মজুমদার পড়ো, তিন বাড়ুজ্যে পড়ো [মানিক, বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর], ওয়ালিউল্লাহ পড়ো, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হক পড়ো, কায়েস আহমেদ পড়ো, শহীদুল জহির পড়ো… নাবালকদের মতো শুধু সস্তা পপুলারিটি পড়ো না।
…তুমি পুতুলের বেশি কিছু
নও, তোমার চোখে কাজল
পরালেই তুমি কাজলবতী, তোমার
ঠোঁটে আগুন মাখালেই তুমি
আগুনমুখি, তোমাকে যা
বানাব তুমি তাই, তোমাকে
পাখি
বানালাম তো তুমি পাখি।
উড়বা?…
একবার মাছরাঙাটির কথা ভাবো, ওই যে মাছরাঙা পাখিটি! জলের কতকটা উপরে থেকেও সে কীরকম ধ্যানস্থ দ্যাখো! তার ধ্যান জলের গভীরে, যেখানে একটি মাছই তার তীব্রতার কাছে হার মেনে যায়। জল থেকে সেই মাছ ঠোঁটে নিয়ে শূন্যে উড়ে যায় আমাদের পাখিটি। মাছ একটি চরিত্র, মাছরাঙাও একটি চরিত্র। মাছরাঙা তার চরিত্রে স্থির থাকলেই মাছ তার ঠোঁটে গেঁথে যায়। মাছরাঙা লক্ষ স্থির করে ধ্যান করে। তুমি মাছরাঙা হও, তুমি শূন্যে থেকেও জলে ধ্যানস্থ হও, তুমি ডানায় ভারসাম্য রেখে জলের ওপরে উড়ন্ত কিন্তু স্থির থাকো, তুমি স্থির হও, তুমি ধ্যানস্থ হও, তুমি তুলতুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে আরেকটু নীল হও, তুমি তোমার থেকে বেরিয়ে চিত্রনাট্যের চরিত্রের সঙ্গে আরেকটু মিল হও।

ক্রিয়েশনকে পছন্দ করি বলে ছবি বানাচ্ছি। ছবি বানাচ্ছি আমার অনুভূতি থেকেই উৎসারিত মনোভুবন–ইমোশন-শন-শন-আকাশে ওড়া এক লণ্ঠনের আলো থেকে, আলো দেখে… এটা তোমাকে বুঝতে হবে হে পুতুলসকল… হুম, তুমি পুতুলের বেশি কিছু নও, তোমার চোখে কাজল পরালেই তুমি কাজলবতী, তোমার ঠোঁটে আগুন মাখালেই তুমি আগুনমুখি, তোমাকে যা বানাব তুমি তাই, তোমাকে পাখি বানালাম তো তুমি পাখি। উড়বা? তাইলে পালক লাগিয়ে দিই? ইচ্ছে এমন, আমার ইচ্ছে হলেই তুমি প্রজাপতি কিম্বা তুমি একটি চেয়ার, কোনো নড়াচড়া নেই; তোমাকে একটি নাকছাবি বানালে তুমি থাকবে নাকে। কার? ইচ্ছে হবে যাকে দেখে, তারই নাকে থাকবে নাকছাবি। এইরকমই। ইটস ডিরেক্টরস মিডিয়া।
নির্মাতার অনুভূতি বুঝলেই তুমি নির্মাণের উপযোগিতা ও প্রয়োজনীতা বুঝতে পারবে। তুমি আকর্ষণীয় ও দারুণ একটি ‘শব্দ’ হলেই আমি আমার কবিতাটি লিখতে পারি। আমি কি ভাবতে পারি, তুমি কোনো মানুষ না, তুমি একটি অব্যবহৃত বা কম-ব্যবহৃত শব্দ? তোমার সঙ্গে আরও কয়েকটি ‘তুমি’ মিলিয়ে বা শব্দের ডান পাশে নৈঃশব্দ্য বসিয়ে ও নৈঃশব্দ্যের পরে ফের শব্দ বসিয়ে আমি একটি বাক্য রচনা করব। বা দৃশ্যের পরে দৃশ্য যুক্ত করে একটি সুদৃশ্য বানাব। কবিতাটি লিখব।

শব্দ হে, বাক্য তোমার জন্যে অপেক্ষা করছে। শূন্যতা নেচে উঠতে চায়, পূর্ণতা বেজে উঠতে চায়। এটা বুঝতে পারো? সেই অনুভূতি তোমার আছে তো? কাঁটা দ্য ফিল্ম অনুভূতি দিয়ে নির্মাণাধীন ছবি।
ততটা অ্যাক্টিং স্ক্রিপ্টে থাকে না, যতটা অ্যাক্টিং বাস্তবে করে যেতে হয়। পুরোনো কথা, কে না অ্যাক্টিং করে? তাই ক্যামেরার সামনে অভিনয় অতটা কঠিন কখনোই নয়, যতটা প্রতিদিন তোমাকে অ্যাক্টিং করতে হয় প্রিয়জনদের সঙ্গে। এই যে বললাম, প্রিয়জন। আসলেই প্রিয়জন? নাকি অভিনয়ের মাধ্যমে ‘প্রিয়জন’? স্ক্রিপ্টে তোমার চরিত্র লেখা আছে, বাস্তবে তা কোত্থাও লেখা নেই। কাজেই কেউই ধরতে পারে না অভিনয়। কার্যত মানুষের অভিনয় ক্ষমতা অনেক। বাস্তবের অভিনয় দিয়ে আমি কিছু বানাতে পারব না, সে ক্ষমতা আমার নেই।
কবিতা দিয়ে শুরু করে সিনেমায় গিয়ে ঠেকে গেলে তখন সেই নিঃসঙ্গ দিনের কথা মনে পড়ে। একলা দুপুর-একলা সন্ধ্যা-একলা রাত্রিগুলোর কথা মনে পড়ে। নিঃসঙ্গতা দূরীকরণের বৃথা চেষ্টার কথা মনে পড়ে। সেই নিঃসঙ্গ জীবনের জন্যে জেগে ওঠে মর্মর ভালোবাসা।

আমি অভিনয় করতে পারব না বুঝেই ওদিকে যাইনি, ও ক্ষমতা পাইনি। তবে অভিনয় করাইতে ভালোবাসি। ঠিক বাস্তবে যদ্দূর, তার কাছাকাছি যেতে ইচ্ছে করে।
…আমার ইচ্ছেটাই
আমার লাটিম,
হারানো ঘুড়ি,
ভালোবাসা
কিম্বা
আমার সিনেমা…
আমার ইচ্ছেটাই আমার লাটিম, হারানো ঘুড়ি, ভালোবাসা কিম্বা আমার সিনেমা। তাই তোমার অভিনয়ই দিও তুমি, মিথ্যে হলেও, যার সঙ্গে বাস্তবতা মিলে মিশে যায়…
কাঁটা দ্য ফিল্ম চিত্রনাট্যটি আমার ছবি আঁকারই অংশ, চিত্রনাট্যের শাদা পৃষ্ঠারা বহু আগেই মেঘ হয়ে গেছে, বলিনি কাউকে। এখন বলার সময়, যারা কাঁটা দ্য ফিল্ম-এ যুক্ত, তারাও চিত্রিত মেঘ হয়ে যাওয়ারই অংশ বিশেষ। তারাও আমার আর্টের অংশ, তারাও আমার ‘কখনো’র মতো। তাদেরও আসতে হবে ধ্যানে, নির্মোহে, গভীর নির্জনে।

বাবুই পাখিটি দোকানদার নয়, সে চিপস বেচতে পারে না– এটাই তার শিল্পীসুলভ যোগ্যতা। আর্ট এমনই। আই লাভ আর্ট… তুমি আমার আর্টের অংশ বলেই তোমাকে উদ্দেশ্য করে এত কথা বলি, তোমাকেই বলি ‘কখনো’। টের পাও?
তোমরা হবা নদীপাড়ের কাশফুল, আমি নদীর ওপার থেকে এসে হাওয়া দিয়ে যাব। ‘নদীপাড়ে কাশফুল দুলিতেছে’ মানুষ দেখবে…
‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’ একটা ভালোবাসার প্রজেক্ট
“কোনো প্রসূতিই ভল করে ঘুমোতে পারে না। নির্মাতাও তাই। “– এইটুকুই কোন শিল্পি মনে প্রাণে মেনে নিলেই শিল্প হয়ে ওঠে তিলোত্তমা।
Wonderful writing. Really inspiring and waiting for such a piece of art .As I regularly follow the Facebook page of Kanta the Film , I am become connected with the different activities virtually. I am really excited and eagarly waiting for that. And all the best to such a talented team.
সিনেমার মানুষ না আমি। তবুও বুদ্ধিদীপ্ত এই লিখা টা পড়া অন্যরকম একটা ভাল লাগা কাজ করছে। যতক্ষণ ধরে পড়েছি, মনে হয়েছে শিখছি আমি, কিছু একটা শিখছি।
আর কাটা দ্য ফিল্মের চিত্রনাট্যের যেসব খুঁটিনাটির উল্লেখ হয়েছে এখানে, তা কেমন জানি আমার আমিকে নতুন করে চিনিয়ে দিচ্ছে। ভাবতে শেখাচ্ছে নতুন করে।
ভাল লেগেছে। এক্সিলেন্ট রাইট আপ ♥♥♥।
সন্তানের মতো আদরে রাখা প্রোজেক্ট “কাঁটা দ্য ফিল্ম”
কাশ ফুল হও হাওয়া দিব। টোকন ঠাকুরের এই লাইনটুকু মনে ধরে গেল। এই লাইনটিই লেখাটির অর্থ বলে দেয়। পরিচালকের কাছে শিশু হয়ে হাজির হও, স তোমাকে বড় করে হাজির করবে। দোয়া রইল কাঁটা দ্যা ফিল্মের জন্য। অপেক্ষায় রইলাম।
কাশফুল হও, হাওয়া দিয়ে যাব…
কথাটা খুব লেগেছে…;)
আমি আশা করি প্রত্যেকটা সিনেমাই সমাজকে একেকটা সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি উপহার দিক….:)
কারন এটি পারে সমাজকে প্রভাবিত করতে…
“কাঁটা দ্যা ফিল্ম” অনেক ভালো করুক, সুন্দর করুক….:)
বিশ্বকে জয় করুক ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’…
chomotkar uddog.asa kori valo kisu hote jacche.
অপেক্ষায় আছি কাঁটা র। আশা করছি টোকন ঠাকুর কাঁটা দিয়ে সমাজের কুরুচি সম্পন্ন মানুষগুলোর রুচির পরিবর্তন ঘটাবেন।
অসাধারন লাগল! ♥এই প্রজেক্টের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করছি। ☺
it’s a good sign for our cinema industry…good to see some promising rising stars are working with great passion… 🙂
কাঁটা দ্যা ফিল্ম এর জন্য শুভকামনা….
Opekkhay achi…….
অপেক্ষায় থাকলাম….
কাঁটা’র জন্য ভালোবাসা…
গল্পটা পড়েই , সাথে সাথে আবার পড়া শুরু করলাম, খুব ই কম গল্পের ক্ষেত্রে জীবনে এই কাজ করেছি
এটা ছবিতে কিভাবে আসে , সেটার দেখার অধীর আগ্রহে পড়লাম
আর সঠিক লোকের হাতেই পড়েছে।
টোকন ঠাকুর দা এর হাতেই ছবিটা মানায়
যেদিন এটা দেখতে যাবো, সেটা হবে , আমার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন
শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা
শুভ কামনা অনেক অনেক।
প্রসব করলে প্রসব বেদনা সয্য করতে হয়।ভুমিষ্ট হোক পৃথিবীর সেরা সিনমার একটি।শুভ শুভ
কামনা। Lutfar rahman. flim student BCTI.
[…] একটি সিনেমা করছি। সিনেমার নাম কাঁটা। আমার তেমন পুঁজি নেই। কিন্তু সিনেমা […]
[…] একটি হোটেল কক্ষে মারা যান, তখন কাঁটা প্রডাকশন নিয়ে আমি পুরোনো ঢাকার […]
[…] ২০১৭। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাঁটা সিনেমার অডিশনের বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। […]
[…] অলি-গলি এফোঁড়-ওফোড় করে যখন কাঁটা দ্য ফিল্ম-এর ব্যানার সামনে পড়ল, মনে স্বস্তি […]
জানিনা ভিজ্যুয়ালি শেষমেশ কি দাঁড়াবে! তবে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছি ‘কাঁটা’র। শহিদুল জহিরের কাঁটা কে টোকন ঠাকুর কীভাবে পুনর্জীবন দেবেন সেটা বড় পর্দায় না দেখা পর্যন্ত বোঝা সম্ভব না। তাই ঝিনুক হয়ে গিয়ে নিরবেই সহে যাচ্ছি অপেক্ষার বেদনা..