স্মৃতির কিয়ারোস্তামি

417

মনিরা আকবরি। জন্ম : ১৯৭৪। ইরানি ফিল্মমেকার, অভিনেত্রী, লেখিকা, চিত্রশিল্পী। অভিনয় করেছেন কিয়ারোস্তামির টেন সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে। শোকার্ত মনে স্মরণ করেছেন ফিল্ম-মাস্টারকে…

অনুবাদ । মাহবুব খান


ক্লোজ-আপ— আমার দেখা আব্বাস কিয়ারোস্তামির প্রথম সিনেমা। ১৯৮০ দশকের শেষদিকে ফিল্মটি বানিয়েছিলেন তিনি; তখন ইরানে নির্মিত ইরানি ফিল্মের অভ্যস্ত বিষয়বস্তু ছিল– যুদ্ধ, দেশপ্রেম ও দেশের জন্য ত্যাগ। অথচ, ক্লোজ-আপ ছিল ভীষণ কনটেম্পোরারি একটা ফিল্ম। ফিল্মটি আমার মনে অনেকগুলো গভীর প্রশ্ন তৈরি করেছিল; কারণ, নানাবিধ ফিলোসফিক্যাল বিষয়-আশয়ে পূর্ণ ছিল এটি।

দর্শনগত দৃষ্টিভঙ্গিতে বাস্তবতা কী? কাল্পনিকতা [ফিকশন], স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে সম্পর্ক কী? ক্লোজ-আপ-এর প্রেক্ষাপট এমনই এক অবস্থানে, যেখানে এর উপাদানগুলো একে অপরের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সিনেমায় নতুন অর্থ তৈরি করে। ফিল্মমেকারের সঙ্গে কথক ও দর্শকের সম্পর্ক কী, এবং কীভাবে চরিত্রগুলোর নিজস্ব অনুভূতি ও কৌতুহল তার [ফিল্মমেকারের] সিনেমায় সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে ওঠে?

টেন । অভিনেত্রী : মনিয়া আকবরি । ফিল্মমেকার : আব্বাস কিয়ারোস্তামি
টেন । অভিনেত্রী : মনিয়া আকবরি । ফিল্মমেকার : আব্বাস কিয়ারোস্তামি

প্রায় দুই বছর আমি কিয়ারোস্তামির ভেতরের জগৎ আর ফিলসফিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গী, চেতনা এবং আশেপাশের প্রতিটি ঘটনা ও আয়োজনের প্রতি তার কৌতুহলের সঙ্গে জীবন কাটিয়েছি। আব্বাস ছিলেন খুবই সচেতন ও সংবেদনশীল একজন মানুষ; আর আমি টেন-র এই সমস্ত গভীরতার মধ্যেই থেকেছি। ঐ সময়ের প্রতিটি মুহূর্তে এই সব অনুভূতি ছিল আমার নিত্যসঙ্গী।

আব্বাসের সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে, ফিল্মমেকার হিসেবে অবস্থানের চেয়ে বরং জীবনের প্রতি তার যে দৃষ্টিভঙ্গী– সেটির পাঠ নিজের মতো পেয়েছি আমি। আমাদের এই বন্ধুত্বে আমি সিনেমার সারমর্ম খুঁজিনি কিংবা এর প্রতি আগ্রহী ছিলাম না; বরং আব্বাসের চিন্তাধারার সীমানায় জীবনের নিগুঢ় ও অন্যতর অর্থ খুঁজে বেড়িয়েছি। শুধুমাত্র ইরানি সিনেমায়ই নয়, বৈশ্বিক সিনেমায় তার  মহাপ্রভাব অনস্বীকার্য।


সূত্র : ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট [বিএফআই] ওয়েব সাইট । ৮ জুলাই ২০১৬
Print Friendly, PDF & Email

১টি কমেন্ট

Leave a Reply to মুখোমুখি আব্বাস কিয়ারোস্তামি ও তারেক মাসুদ : শিল্পের জন্য জ্ঞানের দরকার নেই | ফিল্মফ্রি

Please enter your comment!
Please enter your name here